বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রশাসনের তদন্তে কোয়ারেন্টিনে পুলিশের ধর্ষণের প্রমাণ  

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১৯ মে, ২০২১ ১৭:১০

বুধবার ওই নারী আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনাটিকে ‘দুষ্টুমি’ বলে আখ্যা দেন। দুপুর দুইটার দিকে তার সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ‘আত্মহত্যা করতে যাব কেন? ১৪/১৫ দিন ধরে এক জায়গায় আটকে রয়েছি। কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার আবেদন করছি যাতে আমাকে ছেড়ে দেয়। তারা সে কথা মানছে না। এ জন্য আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে দুষ্টুমি করেছি।’

পুলিশের পর এবার জেলা প্রশাসনও কোয়ারেন্টিনে ভারতফেরত নারীকে ধর্ষণের প্রমাণ পেয়েছে।

তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যজিস্ট্রেট ইউসুফ আলী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জেলা প্রশাসক হেলাল হোসেনের কাছে মঙ্গলবার রাতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।

কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যজিস্ট্রেট ইউসুফ আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি মঙ্গলবার রাতে। পুলিশের তদন্ত রিপোর্টের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের তদন্তে মিল রয়েছে। অর্থ্যাৎ প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে। যেহেতু বিষয়টি নিয়ে মামলা হয়েছে এবং বিচারাধীন সেহেতু এ নিয়ে বেশি কিছু বলা ঠিক হবে না।’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা সদর থানার এসআই আবু সাইদ বলেন, ‘আমরা তদন্ত করছি। আসামি জেল হাজতে রয়েছে। ডাক্তারি রিপোর্ট পেতে মাসখানেক সময় লাগবে। রিপোর্ট আসলে বিস্তারিত বলা যাবে।’

খুলানা মেডিক্যাল হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার পর মঙ্গলবার বিকেলে ওই নারীকে নগরীর পিটিআই কোয়ারেন্টিন সেন্টারে পাঠানো হয়। এ সময় তিনি তাকে ছেড়ে দেয়ার দাবি জানান। কিন্তু ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ না হওয়ায় কেউ তাতে সাড়া দেননি।

পরে নিজ কক্ষে ওই নারী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ সময় কোয়ারিন্টিনে থাকা অন্য নারী ও পুলিশ সদস্যরা তাকে রক্ষা করে। এর পর পরই সেখানে যান জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ওই নারীর দেখভালের জন্য নিয়োজিত করা হয় পুলিশ সদস্য।

তবে বুধবার ওই নারী আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনাটিকে ‘দুষ্টুমি’ বলে আখ্যা দেন। দুপুর দুইটার দিকে তার সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ‘আত্মহত্যা করতে যাব কেন? ১৪/১৫ দিন ধরে এক জায়গায় আটকে রয়েছি। কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার আবেদন করছি যাতে আমাকে ছেড়ে দেয়। তারা সে কথা মানছে না। এ জন্য আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে দুষ্টুমি করেছি।’

ভারতে করোনার নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়ার পর গত ২৬ এপ্রিল থেকে সীমান্ত বন্ধ রয়েছে। তবে ভারতে গিয়ে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা বিশেষ অনুমতি নিয়ে ফিরতে পারছেন। এ ক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে দেশে করতে হবে করোনা পরীক্ষা। নেগেটিভ হলেও সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৪ দিন থাকতে হবে কোয়ারেন্টিনে।

খুলনা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেল থেকে সোমবার গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে বার্তা পাঠানো হয়। ওই বার্তায় বলা হয়, ভারত থেকে এসে খুলনায় কোয়ারেন্টিনে থাকা ওই নারীকে এএসআই মোকলেছুর রহমান ধর্ষণ করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ মিলেছে। এর পরপরই মোকলেছুরকে বরখাস্ত করা হয়। গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে তাকে পাঠানো হয় কারাগারে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মোকলেছুর রহমান। ছবি: নিউজবাংলা

মোকলেছুর খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হিসেবে কর্মরত। তিনি খুলনার পিটিআই কোয়ারেন্টিন সেন্টারে গত ১ মে থেকে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার বাড়ি যশোর সদরের দৌলদিহি এলাকায়।

খুলনা মেডিক্যালে থাকার সময় ওই নারী নিউজবাংলাকে ফোনে বলেন, ‘আমার দুটি সন্তান রয়েছে। এ ঘটনায় আমি সামাজিকভাবে হেয় হয়েছি। আমার সঙ্গে যা হয়েছে তা যেন অন্য কোনো নারীর সঙ্গে না হয়। আমি আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

খুলনা সদর থানায় সোমবার এএসআই মোকলেছুরের নামে মামলা করেন ওই তরুণী। এর আগের দিন ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যদের কমিট গঠন করে জেলা প্রশাসন। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন জেলা প্রশাসনের অতিরিক্তি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলাম ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শাহানাজ পারভীন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা ছেলে-মেয়ে উভয়ের ডিএনএ টেস্ট করাব। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।’

কেএমপি থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) মহিলা হোস্টেলে ভারতফেরত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন মোকলেছুর। ডিউটিতে থাকাকালে তিনি নিচতলা থেকে দ্বিতীয় তলায় কোয়ারেন্টিনে থাকা নারীর কক্ষে বিনা অনুমতিতে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন।

‘শনিবার রাতে আবার কক্ষে ঢুকে ধর্ষণচেষ্টার সময় নারী চিৎকার করলে আসামি দ্রুত চলে যান। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রাথমিক অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে সত্যতা মিললে মোকলেছুরকে বরখাস্ত করা হয়।’

খুলনার অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) সোনালী সেন নিউজবাংলাকে জানান, মোকলেছুরকে বরখাস্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর